হুমড়ি - কলমে দেবাশীষ মিত্র

 

হুমড়ি

দেবাশীষ মিত্র

হুমড়ি খাওয়া আদেখলেমি না  দেখালে কি পেটের ভাত হজম হয়! বোধহয় হয়না। সকাল হলেই বাজারের ব্যাগ বগলদাবা করে সোজা বাজার নামক যুদ্ধক্ষেত্রে। আদেখলেমি করে হুমড়ি খেয়ে পড়া গেল রণভূমির মাঝে। বক্সিং, কুস্তি বা কেরাটে, গুঁতো কিছুই বাদ যায়না। আর তার সঙ্গে বাক্যবাণ। জিততেই হবে, "বিনা রণে নাহি দেব সুচাগ্র মেদিনী"। সবচেয়ে সস্তায় বাজারের সব থেকে ভালো জিনিসটা পেতেই হবে। আর তা না হলে চাঁদবদনি গিন্নির মেজাজে অকাল গ্রহণের আত্মপ্রকাশ। 


এরপর বাড়ি ফিরে জলখাবারের পর্ব মিটিয়েই ফেসবুক আর হোয়াটস আপ। এ বলে আমায় দেখ আর ও বলে আমায়। আজকাল এই দুটি অঙ্গে বিশ্বরূপ দর্শনের পুণ্যলাভ করা যায়। সুতরাং বোতাম টেপাটেপির খেলা শুরু হয়ে গেল। এটা সারাদিনই চলবে, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে কাজের জায়গায় এই আদেখলেমির হুমড়ি খাওয়ায় ইতি নেই। 


এখন করোনার জন্য বাঙালি আর বিবাগী হতে পারছে না। না হলে গিন্নির গুঁতো ....."তোমার মুরোদ কত জানা আছে, তোমার পাশের ফ্ল্যাটে অধিকারী সাহেব কাশ্মীর যাচ্ছে সামনের মার্চে।".... বাঁচা গেছে গত দুবছর করোনা দেবীর মাহাত্মে গিন্নি আর হুমড়ি খাচ্ছে না। থুড়ি ভুল বললাম, গিন্নি সব হিসেব জমিয়ে রেখেছে করোনা দেবীর প্রস্থানের অপেক্ষায়। তার মানে দাঁড়ালো "হুমড়ি" নামক শব্দটির মাহাত্ম জনজীবনের মাঝে অসীম। খানিকটা যেন রবি ঠাকুরের পুরাতন ভৃত্যের মতন।আত্মার সাথে রয়েছে আঠার মতো। হুমড়ি না খেলে আত্মার উত্তরণ ঘটানো খুব খুব কঠিন। তাই বাঙালির জীবনে নবজাগরণের আলো ছড়ানোর জন্য হুমড়ি খান ও মাভৈ রবে ওই কাজে আত্মনিয়োগ করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

close