লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন...কে ছিলেন এই গৌরী সেন ? ... কলমে গায়ত্রী ( কোহিনুর)

লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন......... কে ছিলেন এই গৌরী সেন ?

গায়ত্রী ( কোহিনুর) 

চিন্তা কিসের লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন.. আপামর বাঙ্গালীর কাছে অতিপরিচিত  এই  প্রবাদ। কিন্তু 
এটা শুধুই প্রবাদ নয়। শুনে চমকে গেলেন ? স্বাভাবিক, কারণ আমরা বাঙ্গালীরা প্রবাদটাকে চিনলেও প্রবাদপ্রতিম এই গৌরী সেন কে প্রায় চিনিনা বললেই চলে। আজ্ঞে হ্যাঁ মশাই গৌরী সেন কিন্তু সত্যিই ছিলেন। আমি বলছি না ইতিহাস বলছে। 

     সপ্তগ্রামের এক সুবর্ণ বনিক ছিলেন পুরন্দর সেন, এই সেন পরিবারেরই এক বংশধর নন্দরাম সেনের ছেলে গৌরী সেন । ঠিক ধরেছেন এই সেই আমার আপনার গৌরী সেন।কিন্তু কেমন করে গৌরী সেন প্রবাদ হলেন সে এক গল্প বটে। সেই গল্প শুনতে চোখ রাখুন আর্টিকেলে আর সঙ্গে রাখুন চা মুড়ি, রেডি তো ? তাহলে শুরু করি……

Grab This Unbelievable Deal on a Low-Price MacBook – Limited Time Offer! 💻🔥


   এই ইতিহাস জানতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে অনেক আগে। তখন ১৫৮০ সাল।সম্রাট আকবরের অনুমতিতে পর্তুগিজরা ভাগীরথী নদীর তীরে তৈরি করে এক বন্দর নগর । যার নাম হয় হুগলী ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত হুগলী  আস্তে আস্তে একটি জনপ্রিয় বন্দরে পরিণত হয়। এই  হুগলীরই বালাগ্রামে জন্ম হয় গৌরী সেনের। ইতিমধ্যে এই ব্যান্ডেল গ্রামে পর্তুগিজ মিশনারিরা তৈরি করে একটি চার্চ। বর্তমানে যার পরিচিতি ব্যান্ডেল চার্চ নামে। এই গির্জাতেই দেওয়ানীর পদে চাকরি করতেন গৌরী সেন। ভালোই  কাটছিল দিন। নতুন সংসার, নতুন চাকরি। কিন্তু সব ভালো তো বেশিদিন স্থির হয় না। তাই গৌরী সেনের ও বেশিদিন ভালো থাকা  হলো না। 

১৬৩২ সালে মুঘল সৈন্যরা দখল করলো দিল্লী। ফলত গির্জার অবস্থা বেহাল হয়ে পরে। চাকরি যায় গৌরী সেনের। এবার উপায়…… গৌরী সেন ততদিনে দুই সন্তানের পিতা। অনেক ভেবে চিন্তে উপায় বার হলো, এক্সপোর্ট  ইমপোর্ট এর ব্যবসা শুরু করলেন । দিন কয়েকের মধ্যেই পসার জমে উঠলো । বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করলেন এক শিবমূর্তি।কিন্তু যথেষ্ট পরিমান টাকা না থাকায় মন্দির বানাতেপারলেন না।

Banggood.com

   এরই মধ্যে ঘটলো এক মিরাকেল।তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাত নৌকা দস্তা কিনেছিলেন। সেই সাত নৌকা দস্তা বিক্রির জন্য পাঠানো হল মুর্শিদাবাদ। কিন্তু ঘাটে যখন নৌকা পৌঁছালো দেখা গেল গায়ে দস্তা লেখা থাকলেও আদতে নৌকা ভর্তি রুপা।কাজেই নৌকা আবার ফেরত এলো হুগলী তে। কেমন করে এই ঘটনা ঘটলো তা জানা জায়নি।তবে শোনা যায় এই রূপা বিক্রিকরেই নাকি তিনি রাতারাতি বড়লোক হয়ে গেছিলেন। গৌরী সেন মনের দিক থেকে ও ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু। কারো কোন বিপদ কিংবা সমস্যা শুনলেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন সাহায্য করার জন্য। 

  হুগলীর সমস্ত খাবার দোকানে বলা ছিল তার নাম করে যদি কোন গরিব মানুষ  খাবার খেতে চায় তাকে যেন খেতে দেওয়া হয়। আর সেই থেকেই দোকানদারদের মুখে মুখে ঘুরতে লাগে এই কথা। “ লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন” । এরম করেই তারা খদ্দের ডাকা শুরু করে। কালক্রমে এই কথাই পরিণত হয় কিংবদন্তী প্রবাদে। আনুমানিক ১৬৩৭ সালে মারা যান গৌরী সেন।এখন ও তার বংশধরেরা বেঁচে আছেন। 

আর গৌরী সেন ????? তিনি তো প্রবাদ পুরুষ………


বিঃ দ্রঃ - লেখিকার নিজের Aladdin [Rongin Protidin] নামে  একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে । সেখানে তিনি নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। এই লেখাটির উপর একটি সুন্দর ভিডিও আছে , আপনারা চাইলে সেটি দেখতে পারেন । 




আপনি যদি আপনার লেখা আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে চান , তাহলে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ  "সাহিত্য মেলা "তে  Join করুন । 

"সাহিত্য মেলা " - https://www.facebook.com/groups/sahityomela



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

close