সিঙ্গারার জন্ম
গায়ত্রী
বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। এমন সময় হঠাৎ লোডশেডিং । ব্যাঙয়ের ডাক ঝিঁ ঝিঁ পোকার তীব্র স্বরে চেনা পরিবেশ মুহূর্তে অচেনা। ঘরের দেওয়ালে ভুতুড়ে আলোছায়া।চার বন্ধু মিলে ভাবছিলাম গল্পটা কে আগে শুরু করবো….. এমন সময় বৌদি হাজির। হাতে চায়ের ভাঁড় আর সঙ্গে গরমা গরম সিঙ্গারা নিয়ে। ব্যাচেলার লাইফে আর কি চাই। খবরের কাগজ বিছিয়ে তাতে মুড়ি ঢালা হলো।এবার গল্প শুরু র পালা।বাইরে তখনও শ্রাবনের ধারা। আমাদের মধ্যে শিবুদাই প্রথম মুখ খুললো। ভেবেছিলাম ভূতের গল্প হবে। কিন্তু দেখলুম না! হাতে তিন কোণা ভাজা টা নিয়ে শিবুদা শুরু করলেন…..
Grab This Unbelievable Deal on a Low-Price MacBook – Limited Time Offer! 💻🔥
বলি সিঙ্গারা তো খাচ্ছিস, কিন্তু বলতে পারিস এর জন্ম কোথা। সত্যিই তো এ তো কখন ও ভাবিনি। তিন জনের মুখই মুহূর্তে হা। আমাদের হা মুখ বন্ধ করতে শিবু দা ফের মুখ চালালেন। বুঝলি সিঙ্গারা বা সামোসা হল ফুল ফ্রেজের বিদেশি খানা। কি হলো বিশ্বাস হচ্ছে না তো?????!!
কিন্ত বাবা তোমার বিশ্বাসে কি এসে যায়। যা সত্য তা হল ….. সিঙ্গারা শব্দটা হল পার্সি শব্দ। জানিস এর আদি রূপ হলো সংবোসাগ বা সাম্বুস। তবে কি জানিস তো পারস্যের এই খাবারের ভিতর আলুর পুর থাকতো না। থাকতো মাংসের পুর। আমাদের কৌতূহলী মুখের দিকে তাকিয়ে বেশ জমিয়ে বসলেন শিবু দা। সিঙ্গারায় এক কামড় আর চায়ে এক চুমুক দিয়ে ফের হাঁটা লাগালেন সিঙ্গারার আঁতুড় ঘরের দিকে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে তো বুঝলাম কিন্তু কেমন করে সে এ দেশে এলো তাই বলো তো ……..
![]() |
চাটনি সহযোগে সিঙ্গারা যেন অমৃত সমান |
হুম…. ব্রিলিয়ান্ট কোয়েশ্চন…… বেশ তবে শোন, ইরানীদের হাত ধরে পশ্চিম এশিয়ার এই খাবার ঢুকে পড়ে ভারতীয় খানায় , এখানেই শেষ নয় একেবারে সোজা চলে যায় মালোয়ারের সুলতানের রাজসভায়, ইতিহাস তাই বলে সে রাজদরবারে বেশ ভালোই কদর ছিল সিঙ্গারার। ইতিহাস আর ও কি বলে জানিস… মহম্মদ বিন তুঘলকের রাজসভাতেও রীতিমতো বাদশাহি কদর জুটেছিল সিঙ্গারার। তবে তখনও অবশ্য সিঙ্গারায় আলুর পুর এর প্রচলন চালু হয়নি।
এর পরবর্তী সময়ে পর্তুগীজদের হাত ধরে বাংলায় আসে বাটাটা ওরফে আলু। বাঙ্গালী স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই আপন করে নেয় পর কে। এর ও অনেকপরে এক্সপেরিমেন্টের হাত ধরে সিঙ্গারায় আলুর পুরের প্রচলন হয়। সঙ্গে স্বাদ বাড়াতে আসে চাটনি। মাঝে মাঝে অবশ্য আলুর পুরের ও রকম ফের ঘটে।
তাহলে ভায়া, আমার কথাটি ফুরোলো নটে গাছটি মুরালো……… শিবুদা গল্প শেষ করে আড়মোড়া ভাঙলেন।
বাইরে বৃষ্টি ধরে এসেছে, যে যার ছাতা বগলদাবা করে উঠে দাঁড়ালাম। ঘরময় সিঙ্গারার গন্ধ তখনও পিছু ডাকছে। মনে মনে বললাম বিদায় বিদেশি বন্ধু আজকের মত বিদায়, আবার দেখা হবে, তোমায় কি ছাড়া যায়……. তুমি যে স্বাদে গন্ধে লোভনীয়,তাই তো তুমি স্মরণীয়।
আপনি যদি আপনার লেখা আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে চান , তাহলে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ "সাহিত্য মেলা "তে Join করুন ।
"সাহিত্য মেলা " - https://www.facebook.com/groups/sahityomela
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for your comments.