বিশ্বকোষ লেন, বইয়ের নামে রাস্তা কলকাতায়.. লেখনে গায়ত্রী( কোহিনুর)

 


বিশ্বকোষ লেন, বইয়ের নামে রাস্তা কলকাতায়.....

গায়ত্রী( কোহিনুর)

কলকাতা, প্রেমের শহর, ভালোবাসার শহর। এ শহর জানে তোমার আমার প্রথম প্রতিশ্রুতির গল্প। এ শহর জানে প্রতিশ্রুতি ভাঙার গল্প। এ শহর লিখে রাখে ইতিহাস। এ শহর আমার  শহর, আমাদের শহর। 


এ শহরেই থাকতো ইতিহাস পাগল এক ছেলে। নাম তার নগেন্দ্রনাথ বসু। বাড়ি  উত্তর কলকাতার বাগবাজার। কাটাপুকুর  বাই লেন। ছোটবেলা থেকেই ইতিহাস তার প্রিয় বিষয়। ইতিহাসচর্চা ছিল তার একমাত্র ধ্যান জ্ঞান। তবে শুধু ইতিহাস নয় ,সাহিত্যের প্রতিও ছিল তীব্র আকর্ষণ। অনেক ছোট বয়েস থেকে কবিতা লিখতো। বড়ো হতেই শুরু হলো কর্মজীবন। কর্মজীবনে সে সম্পাদনা  করলো বেশ কিছু পত্রিকা।  শুধু পত্রিকা নয় বাংলা থেকে ইংরেজি অভিধান ও সম্পাদনা করলো সেই ছেলে। অনুবাদ সাহিত্যে ও তার ব্যাপ্তি ছিল বিশাল ।


সেই ইতিহাস পাগল ছেলেটা বড়ো হয়ে সদস্য হলো এশিয়াটিক সোসাইটির।  বাংলা সাহিত্যের ভাগ্যাকাশে তখন নক্ষত্রের ছড়াছড়ি।
তেমনই দুই নক্ষত্র রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় আর ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর উদ্যোগে ১৮৮৭ সালে তৈরি হলো বাংলা ভাষার প্রথম এনসাইক্লপিডিয়া, বিশ্বকোষ যার নাম। ভারতীয় ভাষার ইতিহাসে এমন যুগান্তকরী পদক্ষেপ এই প্রথম।




এর পরের বছরই ইতিহাস পাগল ছেলেটার স্বপ্নপূরণ হলো। সে দায়িত্ব পেলো বিশ্বকোষ তৈরীর।  দীর্ঘ ২২ বছরের চেষ্টায় তৈরী হলো এক নতুন ইতিহাস। ১৯১১ সালে ২২ খন্ডে প্রকাশিত হলো নগেন্দ্রনাথ বসু সম্পাদিত বিশ্বকোষ। যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৭ হাজার।

না এখানেই গল্প টা শেষ হয়নি ১৯৩৩ সালে নগেন্দ্রনাথ বসু আবার শুরু করলেন নতুন ভাবে বিশ্বকোষের কাজ । কিন্তু এবার বাধ সাধলো সময়। থমকে গেলো নগেন্দ্রনাথ বসুর জীবন ঘড়ি। 


জীবন থেমে গেল ঠিকই তবে ইতিহাস কিন্তু তাকে মনে রাখলো বিশ্বকোষের মত অবিস্মণীয় সৃষ্টির জন্য। কারণ এই বিশ্বকোষই ঘরে বসে পৃথিবীকে জানার সুযোগ করে দিয়েছিল মানুষকে। 


আর আমার শহর ১৯১৫ সালে তার বাড়ির সামনের রাস্তার নাম বদলে রাখলো ' বিশ্বকোষ লেন '।
 বইয়ের নামে  কোনো রাস্তার নাম এমন ঘটনা ইতিহাসে প্রথম। শুধু ইতিহাস কেন বাঙালি জীবনেও এই ঘটনা যেমন গর্বের তেমনই বিস্ময়ের।



লেখিকার ইউটিউব চ্যানেলের লিঙ্ক দিলাম । আপনারা চাইলে এই ধরণের বিষয়ের উপর অনেক ভিডিও সেখানে দেখতে পারেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

close